“দুনিয়াতে যত করিয়াছে বিয়ে, সকল নারী নর
অর্ধেক তার ডিসেম্বরে, বাকি অর্ধেক ঈদের পর।”
ফেসবুকে নিউজফিডটা স্ক্রল করতেই একদিন হঠাৎ এই ফান পোস্ট দেখে চোখ আঁটকে যায়। বিয়ে কি সত্যিই শুধু শীতকাল আর ঈদের পর হয়? গ্রীষ্ম, বর্ষা বা শীত ছাড়া অন্য ঋতুতে হয় না? চলুন আজ বরং আমরা গ্রীষ্মকালের বিয়ের কিছু সুবিধার কথা জেনে নেই।
প্রি-ওয়েডিং ফটোগ্রাফি: প্রি-ওয়েডিং ফটোগ্রাফির চাহিদা বা প্রচলন যাই বলি না কেনো তা দিনদিন বাংলাদেশে লক্ষনীয়ভাবে বেড়ে চলেছে। কারণ, মানুষ তার বিশেষ দিনটাকে স্মৃতির পাতায় স্মরণীয় করে রাখতে অন্যসব আয়োজনের চেয়ে ছবি তুলে রেখে, তা যুগের পর যুগ দেখে নস্টালজিক হতে পছন্দ করে। দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে দিনের পরিধি স্বভাবতই একটু বেশি থাকে। যার ফলে আপনি চাইলেই দিনের রোদের মিষ্টি আলোয়, ভিন্ন ভিন্ন লোকেশনে প্রি-ওয়েডিং ফটোগ্রাফি সেরে ফেলতে পারবেন। বিয়ের মৌসুম না হওয়ায় আপনি আপনার পছন্দের ফটোগ্রাফারকে সহজেই পেয়ে যেতে পারেন। আর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে কিছুটা ডিসকাউন্টও পাওয়া যেতে পারে।
মৌসুমি ফল: গ্রীষ্ম সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত তার মৌসুমি ফলের কারণে। বিয়েতে ইদানিং বেশ কয়েকটা অনুষ্ঠান ঘটা করেই আয়োজন করা হয় যার ভেতর গায়েহলুদ অন্যতম। গায়েহলুদের মঞ্চে মৌসুমি ফলের বাহারি আয়োজন করে তুলতে পারে আপনার দিনটিকে অনন্য সুন্দর। ভিন্ন স্বাদের ফ্রুট সালাদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফলের বাহারি সাজ দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে যাবে। আর গরমে তৃষ্ণা মেটাতে ফ্রেশ জুসের ব্যবস্থা করা যেতেই পারে। গায়েহলুদের অন্যসব খাবারের সাথে আপনি চাইলে সাশ্রয়ী বাজেটে সবার জন্য রাখতে পারেন মৌসুমি ফলের সালাদ আর জুস। এতে করে সবাই পেটপুরে খেতেও পারবে আর তাদের অস্বস্তিও হবে না। এটা তো শুধু বিয়ের আয়োজনে খাবারের কথা গেলো, চাইলে বর/কনের বাড়িতে পাঠানো যাবে মৌসুমি ফলের ডালা সাজিয়ে।
বাজেটে সাশ্রয়: যেহেতু গ্রীষ্মকাল স্বাভাবিক ভাবেই এদেশে বিয়ের মৌসুম না, তাই আপনি বিয়ের কেনাকাটায় খুব একটা ভীড় অথবা বেশি দামে কেনার ঝামেলায় পড়বেন না। বরং এই মৌসুমে কেনাকাটায় আপনি কিছুটা মূল্যছাড় পেয়ে যেতে পারেন সবকিছুতেই। যেই পোশাকগুলো সেলাইয়ের ঝামেলা থাকে সেক্ষেত্রে আপনি টেইলার্সেও তেমন ভীড় পাবেন না।
ডেকোরেশন: গ্রীষ্ম শুধু মৌসুমি ফলের জন্য বিখ্যাত তা নয়। বরং এই সিজনে অনেক ধরনের ফুল ফুটতে শুরু করে। এতে আপনি যেমন ডেকরেশনে ফুলের ভিন্নতা আনতে পারেন, তেমনি গায়েহলুদের গহনাতেও আনতে পারেন ভিন্ন ফুলের সাজ। দেখতে তো সুন্দর লাগবেই তাতে থাকবে বৈচিত্র্য
সাজসজ্জা: সাজসজ্জায় আপনি হয়তো শীতের মতো অতটা রিলাক্স মুডে থাকতে পারবেন না। অথবা খুব ভারী শাড়ি বা মেকাপ করতে পারবেন না। তবে অবশ্যই গ্রীষ্মের সাথে মিলিয়ে লাইট মেকাপ আর দেশিও পণ্য হিসেবে মসলিন বা জামদানী শাড়ি সহজেই ক্যারি করতে পারেন। এতে যেমন নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করা যায়, তেমনি সাজসজ্জায় আনবে নতুনত্ব। একই সাথে যদি পছন্দের কোনো বিউটিশিয়ানের কাছে মেকওভার করতে চান, সেক্ষেত্রেও সহজে শিডিউল পাবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
‘বিয়ে’ জীবনের নতুন একটা অধ্যায়। যেখানে একদম একা থেকে দু’জন আর দুটো পরিবারকে সারাজীবন একসাথে পাশে থাকতে হয়। কিছুটা নার্ভাস লাগবে এটাই স্বাভাবিক। তাই যারা গ্রীষ্মকালে বিয়ের কথা ভাবছেন, তাদের জন্য আমাদের এই ছোট্ট টিপস। এবার আপনি বুঝেশুনেই পা ফেলতে পারবেন।